মানব সৃষ্টির পর থেকে একটি নির্দিষ্ট সময়ে এসে প্রয়োজনের তাগিদে মানুষ দলবদ্ধভাবে বাস করার সিদ্ধান্ত নেয়, তখন তাদের মাঝে পারস্পারিক সম্পর্ক এবং নির্ভরতা সৃষ্টি হয়।
এর থেকে সমাজের সৃষ্টি হয় এবং পরে তা থেকে সভ্যতা। সময়ের সাথে সাথে পারস্পারিক পরিবেশের সাথে মানুষের চিন্তা ভাবনা কিভাবে পরিবর্তিত হয়েছে তা এখনো ইতিহাসবিদ এবং নৃবিজ্ঞানীদের প্রিয় গবেষণারর বিষয়।
এখন আমরা আলোচনা করবো সেই দশটি সত্যিকারের মানব সভ্যতার কথা যেগুলো কোন কল্প কাহিনীর সভ্যতা নয় (যেমন আটলান্টিস,লেমুরিয়া, রামা সভ্যতা), যে সভ্যতাগুলো মানব জাতিতে বিপ্লব এনেছিলো।
নীচে সভ্যতাগুলো ক্রনোলোজিক্যাল অর্ডার অনুসারে দেওয়া হলোঃ
১০. ইনকা সভ্যতা
প্রি কলম্বাস যুগে দক্ষিণ আমেরিকার সবচেয়ে বড় সাম্রাজ্যটি ছিলো ইনকাদের। বর্তমানের ইকুয়েডর, পেরু, চিলি তাদের সাম্রাজ্যের অংশ ছিলো এবং তাদের প্রধান সামরিক ঘাটি, প্রশাসন ও রাজনীতির কেন্দ্র যেই কাস্ক (Cusco) শহরে তা বর্তমানে পেরুতে অবস্থিত রয়েছে।
ইনকাদের সমাজ বেশ প্রতিষ্ঠিত ছিলো এবং শুরু থেকেই তাদের সাম্রাজ্যের বেশ প্রসার ঘটেছিলো।ইনকারা সূর্য দেবতা ইতির (Iti) পুজারী ছিলো। তাদের সম্রাটকে “সাপা ইনকা” বা “সূর্য পুত্র” (Son of the Sun) উপাধি দেওয়া হতো।
ইনকাদের প্রথম সম্রাট পাচাচুটি (Pachcuti) ছোট্ট একটি গ্রামকে পুমার আদলে বিশাল এক সাম্রাজ্যে রূপান্তরিত করে। তিনিই প্রথম পূর্বপুরুষদের পূজা করার প্রথা চালু করেন।
যখন রাজা মারা যতো তার পুত্র সিংহাসনে বসতো কিন্তু রাজার সকল সয় সম্পত্তি তার আত্মীয়স্বজনদের মাঝে ভাগ করে দেওয়া হতো যারা এর বিনিময়ে রাজার মৃতদেহের মমি করতো এবং রাজার রেখে যাওয়া নীতিগুলো রক্ষা করতো।
এই রীতি ইনকাদের অনেক উন্নতি সাধন করে। ক্রমেই ইনকারা পৃথিবীতে স্থাপত্যশিল্প জন্য সুনাম অর্জন করে যার প্রমাণ হিসেবে আমরা এখনো মাচুপিচু এবং কাস্কো শহরের নির্দশন দেখতে পাই।
৯. অ্যাজটেক সভ্যতা
ইনকারা উত্তর আমেরিকায় যখন সবচেয়ে শক্তিশালী সাম্রাজ্য হিসেবে পরিচতি হয় ঠিক তখনি অ্যাজটেকদের আগমন ঘটে। ১২০০-১৩০০ খ্রিষ্টপূর্বে, বর্তমানের মেক্সিকোতে তারা তিনটি বৃহৎ গোষ্ঠিতে ভাগ হয়ে তিনটি আলদা শহরে বসবাস করতোঃ টেনোচটিটলান (Tenochtitlan), টেক্সোকো (Texoco), টিলাকোপোন (Tlacopon)। ১৩২৫ খ্রিষ্টপূর্বের দিকে এই তিনটি শহরকে একত্রিত করে মেক্সিকো উপত্যকার অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
তখন তারা অ্যাজটেক এর চেয়ে মেক্সিকান নামটি বেশি গুরুত্ব দেয়। মেক্সিকো এবং মধ্য আমেরিকার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সভ্যতা মায়া সভ্যতার যে শতাব্দীতে পতন ঘটে সেই শতাব্দীতে অ্যাজটেকদের উত্তান ঘটে।
টেনোকচিটান শহর ছিলো তাদের প্রধান সামরিক ঘাটি, যেটি তাদের সাম্রাজ্য বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিলো। কিন্তু অ্যাজটেকদের সম্রাট সাম্রাজ্যের সব কয়টি শহরকে সরাসরি শাসনন করতো না, এর জন্যে আলাদা আলাদা স্থানীয় সরকার নিযুক্ত করা থাকতো যদিওবা এর বিনিময়ে সেইসব সরকারদের রাজার কাছে উচ্চ কর দিতে হতো।
১৫০০ শতাব্দীরর দিকে অ্যাজটেকরা তাদের ক্ষমতার শীর্ষে উঠে। কিন্তু এরপরেই তাদের সাম্রাজ্য দখল করে নেওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে স্পেনীয়দের আগমন ঘটে।
১৫২১ শতাব্দীতে বিখ্যাত হারমান করটেস (Harman Cortes) এর নেতৃত্বে স্পেনীয়রা অ্যাজটেক দের সাথে যুদ্ধে জড়িয়ে পরে এবং এই যুদ্ধে পরাজয় এককালের শক্তিশালী ক্ষমতাবান অ্যাজটেকদের পতন নিয়ে আসে।
৮. রোমান সভ্যতা
ছবিতে যে রোমান সভ্যতাকে দেখা যাচ্ছে তা প্রায় ৬ষ্ঠ শতাব্দি সময়কার। এই সভ্যতার ভিত্তির পিছনের যে ইতিহাস তার সাথে জড়িয়ে রয়েছে অনেক উপকথা আর কাহিনী যার বেশিরভাগই পৌরাণিক উপকথা।
তবে ক্ষমতার শীর্ষে এসে রোম পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি ভূখন্ডে নিজের সাম্রাজ্য বিস্তার করেছিলো, বর্তমানে মেডিটেরিয়ান সাগর এবং এর আশেপাশে দেশগুলো রোমান সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিলো।
রোমান সভ্যতা সূত্রঃ https://www.ancienthistorylists.com/
শুরুর দিকে রোমে রাজতন্ত্র দিয়ে রাজ্য পরিচালনা করা হতো। রোম জুলিয়াস সিজার, ট্রাজান ও অগাস্টাস এর মতোন পৃথিবীর ইতিহাসের সেরা নায়কদের উত্তান ও পতন দেখেছে।
কিন্তু সময়ের সাথে রাজ্যের পরিধি বেড়ে যাওয়ায় শুধুমাত্র একটি নিয়মে রাজ্য পরিচালনা করা কঠিন হহয়ে দাঁড়ায়। ছয় প্রজন্ম রাজতন্ত্রের পর রোমানরা তাই রাজ্য পরিচালনার ভার নিজেদের হাতে তুলে নেয়।
তারা তখন “সিনেট” নামের একটি কাউন্সিল গঠন করে এবং এই সিনেট রাজ্য পরিচালনা করতো। এর থেকে প্রজাতন্ত্রের সৃষ্টি হয়। পূর্ব-দক্ষিণ ইউরোপের বর্বরদের হাতে পরাক্রমশালী রোমান সাম্রাজ্যের করুন পতন ঘটে।
৭. পারসিয়ান সভ্যতা
একটা সময় ছিলো যখন পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী সাম্রাজ্য ছিলো পারসিয়ানদের। শুধুমাত্র ২০০ বছরের শাসনে তারা ২০০ মিলিয়ন বর্গ মিটার অঞ্চল দখলে এনেছিলো।
মিশর-গ্রিসের উত্তরাঞ্চল থেকে শুরু করে ভারতের পূবের অঞ্চল তাদের দখলে ছিলো। পারসিয়ান সম্রাট দক্ষ রাজ্য পরিচালনা এবং সামরিক শক্তির জন্যে সুপরিচিত ছিলেন।
পারসিয়ান সভ্যতা
কিন্তু ২০০ বছরে ২ মিলিয়ন বর্গমিটার অঞ্চলের মালিক হওয়ার আগে ৫৫০ খ্রিস্ট পূর্বের দিকে পারিসিয়ানরা (তৎকালীন সমেয়ে পারসি নামে পরিচিত) আলাদা আলাদা অঞ্চলে আলাদা আলাদা শাসকের শাসনে বাস করতো।
কিন্তু পরবর্তিতে রাজা সাইরাস দ্বিতীয়, যিনি পরবর্তিতে সাইরাস দি গ্রেট নামে পরিচিত হোন তিনি ক্ষমতায় আসার পর সমস্ত পারসিয়ান শহরগুলোকে একত্রিত করে পারসিয়ান সাম্রাজ্য গঠন করেন এবং প্রাচীন ব্যবিলনকে জয় করতে অভিযানে নামেন। তিনি এতো বেশি রাজ্য জয় করেন যে ৫৩৩ খ্রিস্ট পূর্বের শেষের দিকে ভারতের পুবের অঞ্চলগুলো তার দখলে আসে।
পরিবর্তে সাইরাস মারা যাওয়ার পরেও তার বংশধরেরা তাদের জয় বজায় রাখে এবং সাহসী স্পার্টানদের সাথেও তারা ঐতিহাসিক যুদ্ধ করে। ক্ষমতার শীর্ষে এসে পারসিয়ানরা মধ্য এশিয়া,ইউরোপ এবং মিশরের কিছু অংশে সাম্রাজ্য বিস্তার করে।
কিন্তু সবকিছু বদলে যায় যখন ঐতিহাসিক যোদ্ধা ম্যাকেদন (Macedon), আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট এর কাছে পারসিয়ানরা পরাজিত হয় এবং ৫৩০ খ্রিষ্টাব্দে পারসিয়ানদের পতন ঘটে।
৬. প্রাচীন গ্রিক সভ্যতা
অন্যান্য সভ্যতার মতোন গ্রিক সভ্যতা তেমন পুরনো না হলেও এটা নিঃসন্দেহে বলা যায় এই মানব সভ্যতায় সবচেয়ে বেশি পরিবর্তন এনেছিলো এই সভ্যতাটি।
যদিও বা গ্রিক সভ্যতার জন্ম হয়েছিলো সাইক্লাডিক (Cycladic) এবং মিনোয়ান (Minoan) সভ্যতা (2700 BC-1500BC) থেকে কিন্তু আর্গোলিট (Argolid) এ অবস্থিত ফ্রানচঠি (Franchthi) গুহাতেও তাদের সভ্যতার নির্দশন পাওয়া যায় যা প্রায় ৭২৫০ খ্রিস্ট পূর্বের পুরোনো।
এই সভ্যতার ইতিহাস এতো বেশি সময় ধরে ছড়ানো ছিটানো যে গবেষণার সুবিধার জন্যে ইতিহাসবিদদের এই সভ্যতাকে বেশ কয়েকটি যুগ এ ভাগ করতে হয়েছে, এর মাঝে সবচেয়ে জনপ্রিয় যুগগুলি হচ্ছে – আর্চাইক (Archaic), ক্লাসিকাল, হ্যালেনেস্টিক (Hallenistic) যুগ।
সেইসব যুগ বেশ কয়েকজন গ্রিকের দেখা পাওয়া যায় যারা এই পৃথিবীকে বদলে দিয়েছিলো। তাদের অনেককে নিয়ে এখনো গবেষণা করা হয়। গ্রিকরাই প্রাচীন অলিম্পিক উদ্ভব করেছিলো, গনতন্ত্র এবং সিনেট এর ধারণা তাদের কাছ থেকেই প্রসার পায়। তারা আধুনিক জ্যামিতি,প্রাণীবিজ্ঞান, পদার্থ বিজ্ঞান এর জনক।
পিথাগোরাস, আর্কেমেডিস,ইউক্লিড, প্লাটো,এরিস্টটল, আলেক্সান্ডার দ্য গ্রেট….. ইতিহাসের সর্বসস্তরে এসব গ্রীক মনীষীদের নাম পাওয়া যায় যাদের আবিষ্কার, থিওরি, জ্ঞান এবং সাহসিকতা পুরো মানব সভ্যতায় বিপ্লব এনেছিলো।
৫. প্রাচীন চীন সভ্যতা
৫ নাম্বারে আসে প্রাচীন চীনের কথা যা হান চীন (Han China) নামেও পরিচিত এবং নিঃসন্দেহে এর ইতিহাস অন্যদের থেকে সবচেয়ে আলাদা। কেউ যদি চীনের প্রথম থেকে শেষ সবগুলো ডাইনেস্টি (Dynasty) নিয়ে আলোচনা করতে চায় তাহলে তা পুরোটা বলতে প্রচুর সময়ের প্রয়োজন হবে, এতোই বিশাল চীনের ইতিহাস। বলা হয় যে “ইয়েলো রিভার” এর সভ্যতা থেকে চীন সভ্যতার জন্ম।
প্রাচীন চীন সভ্যতা সূত্রঃ https://www.ancienthistorylists.com/
২৭০০ বিসিতে তে হলুদ সম্রাট (Yellow emperor) সিংহাসনে বসেন, এবং একটি সময়ে সেখান বিভিন্ন ডাইনেস্টির জন্ম হয় যা একসময় একত্রিত হয়ে চীনের জন্ম দেয়। চীনের প্রাচীন গ্রন্থ থেকে জানা যায় ২০৭০ বিসি তে স্কিয়া (xia) ডাইনেস্টি প্রথম চীনে শাসন করে।
এরপর থেকে চীনে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ডাইনেস্টি ক্ষমতায় আসে এবং সর্বশেষ কুইং (Quing) ডাইনেস্টির ১৯২১ এডি তে জিনহাই (Xinhai) বিপ্লবে পতনের মধ্য দিয়ে চীনের ডাইনেস্টির পতন ঘটে।
এবং এর সাথে সাথে শেষ হয় হাজার বছরের প্রাচীন চীনের ইতিহাস যা এখন পর্যন্ত ইতিহাসবিদ এবং সাধারণ মানুষ অবাক করে। তবে এর আগেই তারা বারুদ, কাগজ, ছাপাখান,মদ,কম্পাস,তোপ এর মতোন বহু আবিষ্কার পৃথিবীকে উপহার দিয়ে যায়।
৪. মায়ান সভ্যতা
মধ্য আমেরিকাতে মায়া সভ্যতার জন্ম সম্ভবত ২৬০০ খ্রিস্ট পূর্বের দিকে। এই সভ্যতা বেশি আলোচিত কারণ সর্ব প্রথম ক্যালেন্ডার এই সভ্যতা আবিষ্কার করেছিলো।
এই সভ্যতা সৃষ্টি হওয়ার পর থেকে ক্রমে অনেক উন্নতি সাধন করে এবং একসময় ক্ষমতার শীর্ষে এসে ১৯ মিলিয়ন জনসংখ্যার উন্নত এক সভ্যতা হিসেবে সুপরিচিতি পায়। ৭০০ বিসির দিকে মায়ানরা নিজস্ব অক্ষর তৈরি করে এবং পাথরে সোলার ক্যালেন্ডার/সূর্য ঘড়ি খোদাই করে।
মায়ান সভ্যতা
তাদের মতে পৃথিবীর সৃষ্টি হয়েছে ১১ই আগস্ট, ৩১১৪ খ্রিস্ট পূর্বতে, এই দিনটি থেকেই তাদের ক্যালেন্ডার শুরু হয় এবং শেষ হয় ২১ই ডিসেম্বর, ২০১২ সালে। প্রাচীন মায়ানরা সংস্কৃতিতে অন্যান্য সভ্যতা তগেকে অনেক এগিয়ে ছিলো।
মায়ান এবং অ্যাজটেক উভয়ে বহু পিরামিড তৈরি করেছে যার অনেকগুলো মিশরের পিরামিড থেকে আকারে অনেক বড়। কিন্তু ৮ম/৯ম শতাব্দীর দিকে ১৯ মিলিয়ন জনসংখ্যার মায়ানরা হঠাৎ করে নিরুদ্দেশ হয়ে যায় যা আজো রহস্য রয়ে গেছে।
যদিওবা সব মায়ান নিরুদ্দেশ হয়ে যায়নি, মধ্য আমেরিকা তে এখনো তাদের বংশধরদের খুজে পাওয়া যায়।
৩. প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতা
এই তালিকায় প্রাচীন মিশর একটি অন্যতম প্রাচীন সভ্যতা। প্রাচীন মিশরীয়রা সুপরিচিত তাদের সংস্কৃতি,পিরামিড এবং স্পিংক্স এর ভাস্কর্য, ফারাও এর জন্যে এবং একসময় নীলনদের ধারে এই সভ্যতাটি পৃথিবীর অন্যতম রাজকীয় সভ্যতা হিসেবে পরিচিতি পায়।
মিশরীয় সভ্যতা
৩১৫০ খ্রিস্ট পূর্বের দিকে মিশর এর জন্ম হয়, প্রথম ফারাও এর শাসনে মিশর রাজনৈতিক ভাবে উচ্চ এবং নিচু এই দুই অংশে ভাগ ছিলো।
মিশরের ইতিহাসকে বিভিন্ন যুগ ও সাম্রাজ্য এ ভাগ করা হয়েছে যেমনঃ প্রাচীন সাম্রাজ্যের ব্রোঞ্জ যুগ, মধ্য সাম্রাজ্যের ব্রোঞ্জ যুগ এবং আধুনিক সাম্রাজ্যের ব্রোঞ্জ যুগ।
প্রাচীন মিশর আমাদের দিয়েছে অঠল পিরামিড, ফারাওদের মমি, সূর্য ঘড়ি, হিয়েরোগ্লাইপিক্সসহ অনেক কিছু যা আজো আমাদের অবাক করে।
২. সিন্ধু সভ্যতা
আরেকটি অনেক প্রাচীন সভ্যতার নাম ইনডুস সভ্যতা, ইন্ডাস উপত্যকা কে ঘিরে এই সভ্যতার জন্ম। বর্তমানের পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং ভারতের দক্ষিণের কিছু অংশ এই সভ্যতার অন্তর্ভুক্ত ছিলো।
মিশর, মেশোপটেমিয়া এবং ইনডুস এই তিনটি পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীন তিন সভ্যতা এবং এই তিনটি সভ্যতার মধ্যে ইনডুস সবচেয়ে বিস্তৃত ছিলো, প্রায় ১.২৫ মিলিয়ন বর্গ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে ছিলো তাদের সাম্রাজ্য।
এশিয়ার অন্যতম এক নদী ইনডুস নদী এবং দক্ষিন ভারত ও পূর্ব পাকিস্তান এর মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া ঘাজ্ঞার-হাক্রা নদীর তীরে এদের জনবসতি ছিলো।
এই সভ্যতা অঞ্চলের নামানুসারে হারাপ্পান/মহেঞ্জোদারো নামেও পরিচিত। ধারণা করা হয় এই সভ্যতা ২৬০০ খ্রিস্ট পূর্ব হতে ১৯০০ খ্রিস্ট পূর্ব পর্যন্ত ছিলো।
এই সভ্যতাটি আধুনিক যন্ত্রপাতি এবং অনেক প্রযুক্তি আবিষ্কার করেছিলো যার অনেক নির্দশন এখনো ইন্ডুস ভ্যালীতে দেখা পাওয়া যায়। এই সভ্যতা নিপুনভাবে বস্তু দৈর্ঘ, ভর এবং সময় পরিমাপ করতে পারতো।
১. মেসোপটেমিয়ান সভ্যতা
পৃথিবীতে মানব সৃষ্টির পরে সর্ব প্রথম যে সভ্যতাটির সৃষ্টু হয় সেটি হচ্ছে মেসোপটেমিয়া। মেসোপটেমিয়ার জন্ম এতো আগে যে এর আগে অন্য কোন সভ্যতার চিহ্ন পাওয়া যায়নি।
মেসোপটেমিয়ান সভ্যতা
ধারনা করা হয় ৩৩০০-৭৫০ বিসি পর্যন্ত এই সভ্যতাটি টিকে ছিলো এবং এই সভ্যতার হাত ধরে মানুষ সভ্য সমাজের সৃষ্টি করেছিলো।
৮০০০ বিসি এর দিকে তারা কৃষিকাজ আবিষ্কার করে এবং আস্তে আস্তে খাবার ও চাষাবাদের জন্যে গৃহপালিত পশু পালন শুরু করে।
যদিওবা এর অনেক আগে থেকেই মানুষের শিল্পকলার সাথে পরিচয় ঘটে কিন্তু সেটি ছিলো মানুষের সংস্কৃতির অংশ, সভ্যতার নয়।
মেসোপটেমিয়াদের হাত ধরেই মানুষ সভ্য সমাজের প্রতিষ্ঠা করে। বর্তমান ইরাক বা ততকালিন ব্যাবিলিয়ন, সুমার,এস্যারিয়াতে তাদের বাসস্থান ছিলো।
তথ্যসূত্রঃ ancienthistorylists.com
অনুবাদ করেছেন– টরা তঞ্চংগ্যা (শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়)
জুমজার্নালে প্রকাশিত লেখাসমূহে তথ্যমূলক ভুল-ভ্রান্তি থেকে যেতে পারে অথবা যেকোন লেখার সাথে আপনার ভিন্নমত থাকতে পারে। আপনার মতামত এবং সঠিক তথ্য দিয়ে আপনিও লিখুন অথবা লেখা পাঠান। লেখা পাঠাতে কিংবা যেকোন ধরনের প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন - jumjournal@gmail.com এই ঠিকানায়।