
তঞ্চঙ্গ্যা মহিলা বা রমণীদের মুখে কেউ কি কখনো “ভায়ো” ডাকটি শুনেছেন? সম্বোধনের ক্ষেত্রে এমন মধু ডাক খুবই বিরল। যে “টিউনে” এই ডাকটি তঞ্চঙ্গ্যা রমণী বা মহিলারা দেয় সেই “টিউন”-তার মাঝে কি রহস্যময়ী মায়া যে লুকিয়ে থাকে তা যারা শুনেন নি তাদের বোঝানো সম্ভব নয়!
সাধারণত নিজের আপন অথবা নিকটআত্মীয় ভ্রাতাকে অথবা পড়শি কোন যুবককে কিংবা কোন স্বল্প পরিচিত অথবা একেবারেই অপরিচিত আগন্তুক বা মেহমানকেও তঞ্চঙ্গ্যা রমণীরা “ভায়ো” বলে সম্বোধন করে থাকে, এরকমটা খেয়াল করেছি।
ছোটবেলা থেকেই খুব “ফাত্তো” আমি! অনেকে বলে যে, কেবল চেহারাটা নয়, আমার “হাচ্চোত” টা পুরোপুরি আমার বাবার মতোন। আমার বাবা যৌবনে খুবই “ফাত্তো” ছিলেন বোধহয়!
অবশ্য ছোটবেলা থেকে লোকমুখে এমনটাই শুনে শুনে বড় হয়েছি যে, “ত আবেও গাবুরও অক্তত নাঙ গোজ্জে দ”/ “তোমার বাবাও যৌবনে নাম কামিয়েছিলো।” পাহাড়ের ঝড়ো অান্দোলনের শুরুর দিকে “শান্তিবাহিনীর” সদস্য হওয়া ছাড়া জীবনে নাম কামানোর মত কোনকিছু তিনি করতে পেরেছেন এরকম কিছুই আমি দেখি নি।
কোনরকমে “ব-কলম” ডিগ্রীটা ছেড়েছেন! তবে বাবার অনেককিছুই আমার চেতনায় আজো রঙ মেখে দেয়, সে আমি বড় হয়ে খেয়াল করেছি। বাবা পাহাড়ের চিরাচরিত “চুচ্চেঙে খা” -টা ছেড়েছেন বহু বছর হলো।
শুনেছি যে, যখন “পানীয়” নেওয়ার বয়স ছিলো, সেসময় নাকি বাবার আওয়াজটা শুনলে গ্রামের লোকজন “উইয়ো নারেশ্যে এজের” বলে “চেরাগ” নিভিয়ে দিতো! বাবার সেই সোনালী যৌবনের যুগ এখন আর নেই। পেনশনে যাবো, পেনশনে যাবো করতে করতে তিনি আমাকে বুজিয়ে দিতে চান- “তোমার যুগটা শুরু হলো”!
কেবল বাবা নয়, পাহাড়ের অনাদিকালের পূর্বপুরুষের উত্তরাধিকার হিসেবে পূর্বপুরুষের ভিটে-মাটির প্রতি যে দ্বায় ও দেনা জমে গেছে তা শোধবোধ করার সময় যে আমাদের কালের তরুণদের সামনে চলে এসছে তা আমি বেশ করে বুজি এখন!
তাই রণজিৎ দেওয়ানের “চব্বিশ বজরর হোচপানা”-র মতোই একবুক হোচপানা নিয়ে আমি “হিল চাদিগাঙ” – এর উত্তর-দক্ষিণ/পূর্ব-পশ্চিম যখন সুযোগ মেলে কোন প্রান্তকেই বাদ না রেখে “ফাত্তো” বেড়াতে নামি!
কোন একটা বড় “মোন” এ উঠার ক্লান্তি ও ধকল কাটিয়ে উঠতে “ফাগুন-চোত মাস্যে মিধে আভা” -টা যদি শরীরটাকে জুড়িয়ে দিয়ে যায় আর স্বস্তির একটা ঘুম ভেঙে যখন দেখতে পান রাত কেটে গেছে আর কবি ফেলাজেয়া চাকমা-র “হিজিঙৎ পুগোবেল” টা উঁকি দিতে শুরু করেছে আর
আপনি কবি শিশির চাকমার “হুয়োর বর্গী” -শরীরে জড়িয়ে আনমনেই গাইতে থাকেন রণজিৎ দেওয়ানের -“ও মা জু জানাঙ তরে, তর বুগোত জাগা দোজ মরে” তখন অদ্ভূত এক শিহরণে পুরো শরীরটা কাটা দিয়ে যায়!
এরকম অসংখ্য সুখস্মৃতি আমার অভিজ্ঞতার ঝুলিতে জমা আছে। শুনেছি প্রয়াত লারমা শিক্ষাজীবন শেষে পুরো পার্বত্য চট্টগ্রাম চষে বেড়িয়েছিলেন এবং এই সব ঘুরে বেড়ানো অভিজ্ঞতা থেকেই তিনি স্লোগান তুলেছিলেন – “শিক্ষা নাও-গ্রামে ফিরে চলো”।
যদিও এখনও গ্রামে ফিরে যাওয়ার মতোন বারুদ শহর থেকে সংগ্রহ করতে পারি নি তথাপিও পাহাড়ের অসংখ্য “সারাল্ল্যে আদাম” ঘুরে বেড়ানোর যে অভিজ্ঞতা সে ঝুলিতে পাহাড়ের তঞ্চঙ্গ্যা ভাই-বোনদের বেশকিছু এলাকাও ইতিমধ্যে কাভার হয়েছে।
বিভিন্ন জায়গাই ঘুরতে ঘুরতেই তঞ্চঙ্গ্যা আদাম, তঞ্চঙ্গ্যা সংস্কৃতি, ভাষা, সামাজিক রীতি-নীতি প্রভৃতি বেখেয়ালেই খেয়াল করে ফেলেছি! তাই কিছু পর্যবেক্ষণ চিহ্নিত করতে পেরেছি।
এই যেমন ধরুন- তঞ্চঙ্গ্যা রমণীদের এই “ভায়ো” ডাকটি! কী মধুর গো! আবার খেয়াল করেছি যে, সাধারণত তঞ্চঙ্গ্যা ছেলেরা বিয়ের ক্ষেত্রে নিজের থেকে বয়সে সামান্য বড়দেরকে বেছে নেয়। অর্থাৎ বরের চেয়ে কনেরা সাধারণত বয়সে একটু বড় হন।
খেয়াল করেছি যে, তঞ্চঙ্গ্যা ছেলেরা একটু রহস্যময়ী টাইপের হন। ইংরেজীতে “আনপ্রেডিক্টেবল” বলা যেতে পারে। অন্তত মোনঘরে পড়ার সুবাদে এবং পরবর্তীতে ক্যাম্পাসে পরিচিত হওয়া তঞ্চঙ্গ্যা ভাইদের দেখে আমার এরকমটাই মনে হয়েছে।
শান্তিবাহিনীর দুইযুগেরও অধিক সংগ্রামে তঞ্চঙ্গ্যাদের ভূমিকা পজিটিভ নাকি নেগেটিভ সেটা নাকি শান্তিবাহিনীরা কখনোই বুজে উঠতে পারেন নি, এরকমটা আমি এক সিনিয়র বড়ভাইয়ের মুখ থেকে জেনেছি।
অর্থাৎ পাহাড়ের চলমান সংগ্রামটাকে তারা কীভাবে মূল্যায়ন করছে তা বোঝা নাকি বড় দ্বায়। সমর্থন করছে কি করছে না তা বোঝা যায় না, মুখফুটে বিরোধিতাও তারা কখনো করেনি, আবার অংশগ্রহণ যে ছিলোনা তাও নয় এরকম একটি অবস্থা (এগুলো সাধারণ অর্থে পর্যবেক্ষণ, কোন সিদ্ধান্ত বা মতামত নয়)!
কোন তঞ্চঙ্গ্যা ছেলের মনে কী খেলা করতেছে সেটা ঠাহর করতে পারাও বোধহয় বেশ মুশকিল। তারা সাধারণত চুপচাপ প্রকৃতির হয়, অনেকেই ধার্মিক হয়.পরিশ্রমী হয়! কম কথা বলে। মনের গভীরেই লুকিয়ে থাকতে ভালোবাসে তঞ্চঙ্গ্যা ভাই ও বোনেরা। বাইরে থেকে কিছু বুজতে দেয় না।
এবারে শেষবার রাঙ্গামাটি যেয়ে একটি “মোন”- এ তঞ্চঙ্গ্যা পাড়া ঘুরে এসছিলাম! যে মোনটাই এবার উঠেছি, সেখানে ১৭টি পরিবারের বাস। ঘাগড়ার পূর্বপাশে এবং রাঙ্গামাটি সদরের পশ্চিম পার্শে পড়েছে এই এলাকাটি।
যারা বুজতে পারছেন না তাদের সহজ করে বুজিয়ে দিই রাঙ্গামাটি-কাপ্তাই রোডে যখন ঘুরতে যান পশ্চিম দিকে তাকালে যে পাহাড়গুলো দেখতে পান আমি সে এলাকাগুলোর কথাই বলছি।
রইন্যেছুড়ি মোন, কোজোইছুড়ি মোন, বল্টুগাছ মোন প্রভৃতি নিয়ে এ অঞ্চলটা। এই পাহাড় শ্রেণীটার উপরে উঠতে পারলে পূর্ব পাশে স্পষ্ট করে কাপ্তাইলেকের পানি, দক্ষিণে কাপ্তাই বাঁধ ও নেভীক্যাম্প অঞ্চল, পশ্চিমে ঘাগড়া-রইস্যাবিল এবং রাউজান-রানীরহাট-রাঙ্গুনিয়ার ইটভাটাগুলো ও রাঙ্গামাটি-চট্টগ্রাম রাস্তার কিছু কিছু স্পষ্ট দেখা যায়।
এবেলা বেড়ানোর সময়টাতে নান্টু দা একটি দারুণ কথা বলেছে, – “চাকমাউন মত্তনদে শহর তোগেই তোগেই, আ তোনদঙ্যেউন মুড়োউগুরে হি দোলেই চাষবাজ গুরি হাদন্দি”! অর্থাৎ চাকমারা মরতেছে শহর খুঁজতে খুঁজতে, আর তঞ্চঙ্গ্যারা পাহাড়ের চূড়োয় আপন সাংস্কৃতিক সত্ত্বা ও চাষবাস নিয়ে কত ভালো করেই না বেঁচে আছে।
কথাটি একটি সাধারণ পর্যবেক্ষণ। তবে আমি তা ধর্তব্যে নিয়েছি। কেননা আমিও খেয়াল করেছি যে, তঞ্চঙ্গ্যারা অধিকাংশই শিক্ষা-দীক্ষা নিয়েছে সত্য কিন্তু তারা “পাহাড়কে” ভুলে যেতে চায় নি। আমার ধারণা, পাহাড়ে চাষবাসের দিক থেকে পাহাড়ের অর্থনীতিতে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখছে তঞ্চঙ্গ্যারা।
জুমচাষ থেকে শুরু করে হালচাষ, ক্ষেত-খামার, ফলজ বাগান, আদা-হলুদ, “মাইস্যবায়োর” বা বিলেতি ধনেপাতা প্রভৃতি অর্থকরী ফসল উৎপাদনেও তারা দৃষ্টান্ত রাখছে।
সাধারণত “মোন” এ বসবাস করলেও তাদের “ঘর-দোর” বা বসত-বাড়ি গুলো তুলনামূলক অবস্থাসম্পন্ন মনে হয়েছে আমার কাছে। অধিকাংশ তঞ্চঙ্গ্যা গ্রামে বিদু্যৎ না থাকলেও “সোলার” ব্যবহার বেশ করে চোখে পড়েছে।
যদি একটি সরলরেখা টানি, রাঙ্গামাটির “ফুরমোন” পাহাড় থেকে সোজা উত্তরে গেলে কুদুকছড়ি- পাড় হয়ে, কেরেতকাবা মোন হয়ে ফুরমোন পাহাড় শ্রেনীটা উত্তরে খাগড়াছড়ির “আলুটিলা-এহদোচিড়ে মোনকেই” অণুস্মরণ করবে।
আর “ফুরমোন”-র দক্ষিণ দিকটা অণুস্মরণ করলে তা কাপ্তাই জাতীয় উদ্যান হয়ে কাপ্তাইয়ের “রাম-সীতা” পাহাড় হয়ে রাজস্থলী-বান্দরবানের দিকে চলে গেছে। ফুরমোনের দক্ষিণে কাপ্তাইয়ের জাতীয় উদ্যান পর্যন্ত সরলরেখা টানলে এর মধ্যবর্তী অংশে রাঙ্গামাটি সদর-ঘাগড়া-বড়ইছড়ির বিশাল একটা এলাকা পড়েছে।
বিশাল এই এলাকাটি আবার উঁচুউঁচু পাহাড়ঘেরা এবং ভূমি-মালিকানার দিক থেকে প্রায় বেশিরভাগই “মৌজাভূমি”। অর্থাৎ ব্যক্তিগত রেকর্ডীয় ভূমি খুবই কম আছে। ব্যক্তিগত ভোগ-দখলীয় ভূমি থাকলেও সাধারণ মৌজাভূমির পরিমাণ বেশি।
পুরো এলাকাটাই তঞ্চঙ্গ্যা অধু্যষিত। অধিকাংশই আগে জুমচাষী ছিলো। বর্তমানে ফলজ বাগানে আগ্রহ বাড়ছে পাশাপাশি আদা-হলুদ-বিলেতি ধনেপাতার চাষ বেশি। পাহাড়গুলো থাকলেও প্রাকৃতিক বন ও গভীর জঙ্গল একেবারেই কমে এসেছে।
রাঙ্গামাটির এই অঞ্চলটিকে বাদ দিলে, বিলাইছড়ি উপজেলার অধিকাংশভাগজুড়ে তঞ্চঙ্গ্যাদের বসবাস দেখার মতোন। বিলাইছড়ি উপজেলার সবচেয়ে বড় ইউনিয়ন হচ্ছে “ফারুয়া”! পুরোটাই তঞ্চঙ্গ্যা অধু্যষিত!
এই ইউনিয়নটা আবার রেইংখ্যং রিজার্বের অধীনে। চাষবাস বলতে রেইংখ্যং এর দুপারে জুমচাষ আর কোথাও কোথাও “পাগোন্দি ভুই”! ফারুয়ার তঞ্চঙ্গ্যারা শিক্ষা-দীক্ষায় সমগ্র বিলাইছড়ি উপজেলার শিক্ষার-হারকে প্রতিনিধিত্ব করে।
বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়ার সংখ্যাও ভালোই। তবে রাজনৈতিক সচেতনতার দিক থেকে একটু পিছিয়ে আছে। তাদের যে ভূমির উপর অধিকার প্রতিষ্ঠিত হতে পারে নি এই বিষয়টা অধিকাংশ শিক্ষিতরাও বুজতে পারে না রাজনৈতিক অজ্ঞতার কারণে।
অর্থাৎ তারা যে রিজার্ব ফরেস্টে বসবাস করছে, সেটা তারা জানে ঠিকই কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি অনুযায়ী যদি মৌজা-র স্বীকৃতি না মেলে তবে সরকার যখন ইচ্ছে তখনই তুলে দিতে পারবে এ এলাকার জুমচাষীদের সেকথা সচেতনভাবে খুব কমজনেই বুজে, এরকম মনে হয়েছে।
আবার দুঃখজনকভাবে ফারুয়ার লোকজন সেখানকার “সেটেলদের”-কে “সদর” ভাবতে শুরু করেছে এরকম খেয়াল করেছি। দুয়েকটি স্বীকৃত বিয়ের ঘটনাও ঘটেছে বোধহয়। এরকম স্বীকৃত বিয়ের ঘটনা চিৎমরম-র মারমাদের মধ্যেও দুয়েকটি শুনতে পেয়েছি!
খাগড়াছড়িতে তঞ্চঙ্গ্যা আছে বলে জানি না। রাঙ্গামাটির কাপ্তাই আর রাজস্থলী উপজেলা তঞ্চঙ্গ্যা অধু্যষিত। বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলায় আছে ভালো তঞ্চঙ্গ্যা বসতি। এছাড়া বান্দরবান সদরের “নীলাচল” পর্যটন অঞ্চলটা তঞ্চঙ্গ্যাদের উচ্ছেদ করেই করা হয়েছে বোধহয়।
নীলাচলের আশেপাশে কিছু তঞ্চঙ্গ্যা পাড়া আছে। দক্ষিণ দিকে আরো তাকালে, লামা-আলীকদম উপজেলায়ও ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে তঞ্চঙ্গ্যারা। লামা-আলীকদমে যারা আছে তাদের অবস্থা একেবারেই খারাপ! অর্থনীতি বলতে কিছু নেই আর। জুমচাষের যুগ শেষ হয়ে এলো বলে!
জুম-পাহাড়ের ১৪টি জাতি সম্পর্কে প্রত্যেকেরই সবসময় টুকটাক জানার চেষ্টা করা উচিত। এই যেমন আমি জেনেছি,- খেয়াংরা চন্দ্রঘোনা অঞ্চলে, পাংখোয়ারা বিলাইছড়ির সদরের আশেপাশে এবং জুরাছড়ি উপজেলার বসন্ত মোন ও
দুমদুম্যে ইউনিয়নের দুএকটি গ্রামে (আগে নাকি সাজেকেও কিছু ছিলো), খুমী-লুসাইরা বান্দরবানের রুমা উপজেলায়, চাকরা নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায়, ম্রো এবং বমরা রুমা-থানচিজুড়ে। অবশ্য ম্রোরা লামা-আলীকদমের দিকেও ছড়িয়েছে।
চাকমা-মারমা-ত্রিপুরারা অবশ্য তিন জেলাতেই ছড়িয়ে আছে। আবার সান্তাল-অহমিয়া বা আসাম এবং গুর্খাদের আগে জুম্ম হিসেবে ধরা না হলেও তাদেরকে সাথে নিয়েই বর্তমানে বলা হয়ে থাকে পার্বত্য চট্টগ্রামে ১৪ টি জাতি।
সান্তালদের খোঁজ পাওয়া যায় খাগড়াছড়ির পানছড়িতে তবে লক্ষিছড়ি উপজেলার দুয়েকটি গ্রামেও থাকতে পারে, অহমিয়ারা রাঙ্গামাটি সদরের আসামবস্তি ও মাঝেরবস্তি এলাকায় এবং গুর্খারা তবলছড়ির মাঝেরবস্তি ও আনন্দবিহার এলাকার পার্শবর্তী এলকাগুলোতে বসবাস করছে।
যে এলাকাটায় এবার গিয়েছিলাম সেখানে একটি বিশাল ঝরণা আছে। ধারণা করি উচ্চতায় শুভলঙের দ্বিগুণ হবে। শুভলঙ তো শুধু একটা ‘মুড়ো’ বা পাহাড় বেয়ে নেমেছে। এটি পুরো “মোন’-টিকে বেয়ে নেমেছে।
সৌন্দর্যটাও অকৃত্রিম এবং এখনো পুরোপুরি বন্য। তবে বর্ষা ছাড়া পানি থাকে না। যাই হোক যতই ঘুরছি সমগ্র পার্বত্য চট্টগ্রামটাকে দিনদিন আরো বেশি নিবীড়ভাবে দেখতে পাচ্ছি। লুকোনো হাসি-কান্না, আনন্দ-বেদনা থেকে শুরু করে আগামীর সম্ভাবনা! আপনিও ঘুরতে থাকুন, পর্যবেক্ষণ করতে থাকুন এবং প্রস্তুতি নিতে থাকুন।
যে কোন বড় দুর্যোগ মোকাবেলা করার জন্য যে কোন ব্যক্তি এবং জাতির জন্যই আগাম প্রস্তুতি থাকাটা আবশ্যক! কে জানে আমাদের কপালে এরকম দুর্যোগ লেখা আছে কি নেই? তবু প্রাণপণে বিশ্বাস করতে শিখুন যে, – “মুরি আর বাজি এ দেজচান আমার”! ন চাঙ যেবার এই জাগান ছাড়ি….
লেখকঃ সুলভ চাকমা