“সে অনেককাল আগের কথা” দিয়ে জুমজার্নালের গল্প শুরু করার মত নয়। ২০১৫ সালের শেষ দিকের কথা। বাংলা নতুন বছরে জুমজার্নালকে সবার কাছে পাবলিশ করার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করেও অনেক অপূর্ণতা নিয়ে জুমজার্নাল হাজির হয়েছিল আপনাদের সবার সামনে।
চিন্তা ছিল এমন একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা যাকে সবাই ভিতরে ধারণ করে, যার ছাপ থাকে প্রতিটি মানুষের জীবনে – নিজের আত্মপরিচয়, নিজের সংস্কৃতি, যা বহন করে চলেছি সকলে।
যে প্ল্যাটফর্ম দিয়ে শুধু পাহাড়ী জনগোষ্ঠী নয়, বাংলাদেশ সহ পুরো পৃথিবীর সমগ্র আদিবাসী সমাজকে যেমনি নিজেদের স্বকীয় সংস্কৃতির প্রতি সচেতন করা সম্ভব হবে তেমনি সম্ভব হবে আদিবাসী ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ইত্যাদিকে সংরক্ষণ করা।
বর্তমানে সকল জ্ঞানান্বেষী মানুষের জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চার সময়োপযোগী মাধ্যম অনলাইনভিত্তিক ব্লগসাইট; যেখানে সকল শ্রেণীর, সকল পেশার, সকল বয়সের, সকল চিন্তাধারার মানুষেরা একীভূত হতে পারেন।
সবাই নতুন কিছু জানতে ও শিখতে পারেন এবং একই সাথে নিজের চিন্তাধারা এবং জানার জগতকে অন্যদের মাঝে সহজে ছড়িয়ে দিতে পারেন।
বলা যায়, ইন্টারনেট বা অনলাইন জগত বর্তমানে প্রায় সকল ধরনের তথ্য এবং জ্ঞানের অন্যতম এক উৎস। এর পরিধি এত বিশাল হয়ে দাঁড়িয়েছে যে খুব সহজেই আমরা এই ধরনের মুক্ত প্ল্যাটফর্মের সাথে যুক্ত হয়ে খুব সহজে পৃথিবীর যেকোন প্রান্তের সকল মানুষের কাছে পোঁছতে পারি।
তাই এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আমরা পৃথিবী সকল আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীসমূহকে একটি কমন প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসতে পারি। সারা পৃথিবীর মানুষকে করতে পারি আমাদের স্বকীয় সংস্কৃতির মাধ্যমে সিক্ত।
শুধু নিজের বিশ্বাস বা মতবাদকে প্রতিষ্ঠার চেষ্টায় জ্ঞানের প্রকৃত চর্চা হয় না; সঙ্গে অপরের বিশ্বাস, যুক্তিকে বিচারসাপেক্ষে গ্রহণ এবং নিজের ভ্রান্ত বিশ্বাস, ধারণাগুলোকে বর্জন করে সত্যকে প্রতিষ্ঠার গুণ আমাদের অর্জন করে নিতে হয়।
আশা করি, জুমজার্নাল আপনাদের সবার জন্য এক বিশ্বস্ত প্ল্যাটফর্ম হতে পারবে আপনাদের সবার সহযোগিতায়।
জুমজার্নাল আপনাদের কাছে যে সকল আবেদন রাখে –
- ভাবনার বৈচিত্র্যকে গ্রহণ করা, নিজের শেকড়কে হারাতে না দেওয়া এবং তাকে বিকশিত করা,
- সহনশীলতা ধারণ করা, আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর স্বকীয় সংস্কৃতির বিকাশে অবদান রাখা,
- বাস্তবিক অর্থে সুশিক্ষায় শিক্ষিত বিজ্ঞান ভিত্তিক সমাজ কাঠামো দাঁড় করতে সচেষ্ট থাকা,
- লিঙ্গ বৈষম্যে সায় না দেয়া, নতুন প্রজন্মের জন্য সুন্দর আগামী এবং আগামীর সমাজ বিনির্মাণে তরুণদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা,
- কোন ভিন্ন সংস্কৃতির জাতির প্রতি শত্রুভাবাপন্ন মনোভাব, ঘৃণামূলক মনোভাব পোষণ না করা।
- নিজের স্বার্থেই সমাজে অবদান রাখছি – এমন মনোভাব ধারণ করা ইত্যাদি।
যতদিন থাকবে এই ইন্টারনেট জগত ততদিন থাকবে জুমজার্নাল। আর সে জুমজার্নালে ততদিন লেখা হয়ে থাকবে আবহমান আদিবাসী প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কথা, তাদের সমাজের কথা, নিজেদের স্বকীয় সংস্কৃতি আর বৈচিত্র্যময় গল্পের কথা, সুখ-দুঃখ,হাসি-কান্নার কথা, অধিকারবঞ্চিত সংগ্রামী মানুষদের কথা, খেটে খাওয়া সরলমনা মানুষদের আশা-আকাঙ্খার কথা, সুউচ্চ পাহাড়সম সাহসী পাহাড়ীদের কথা যারা স্বপ্ন দেখেছিল কাঙ্ক্ষিত জীবনের, কাঙ্ক্ষিত সমাজের।
একদিন এই মানুষগুলো হয়তো বেঁচে থাকবে না কিন্তু থাকবে তাদের স্বপ্নগুলো লেখা হয়ে, কথা হয়ে এই জুমজার্নালেই।
জুমজার্নালের পাশে থাকুন। জুমজার্নালকে আরো সমৃদ্ধ করতে এগিয়ে আসুন।